বৃহস্পতিবার ● ৫ জানুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা
কমলনগরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা
ইউছুফ আলী মিঠু নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হলেও মানছেন না কেউ। প্রধান শিক্ষকরা যে যার মত করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায় করছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছেন।
জানা যায়, গত ১১ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় প্রতিপত্রে পরীক্ষার ফি, কেন্দ্র, রেজিস্ট্রেশন, সনদ, ব্যবহারিক, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, স্কাউট,জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ও বার্ষিক ক্রীড়া মজুরী ফিসহ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২১৪০, ব্যবসা বিভাগ থেকে ২০২০ ও মানবিক বিভাগ থেকে ২০২০টাকা আদায় করতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অথচ প্রধান শিক্ষকরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। বিজ্ঞপ্তিতে কোচিংয়ের নামে কোন টাকা নেওয়া যাবে না মর্মে নির্দেশনা থাকলেও আবার কোচিংয়ের নামে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫শ’ থেকে ১হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। এ ছাড়াও কেন্দ্র ফি এখন নিলেও বিগত দিনে পরীক্ষার সময়ে আবার নতুন করে পরীক্ষার্থীদের কাছে থেকে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা কেন্দ্র ফি এবং ব্যবহারিকের নামে প্রতি বিষয়ে ১শ’ টাকা করে আদায় করেন হল সচিবরা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলা উচ্চমাধ্যমিক ২ কেন্দ্রে ১৩৭৮ও মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৪৮৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে। এ বছর ১৮টি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৪ মাদ্রাসায় প্রায় ২হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছেন। বিভিন্ন অজুহাতে সব প্রতিষ্ঠানেই ফরম পুরনের নামে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, ফরম পূরণের সময়ে অতিরিক্ত টাকা নেয় প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। পাশ করার পর সনদ নিতে গেলে আবার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে প্রশংসাপত্র, মার্কসীট ও সনদ আটকিয়ে রাখেন। প্রধান শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এখন ব্যববসা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছেন। প্রধান শিক্ষকদের এ সব অনৈতিক কর্মকান্ডগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে উদয়ন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল আমিন জানান, গত বছর পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হল সচিব কেন্দ্র ফি শিক্ষার্থী প্রতি ৫শ’ টাকা করে দিতে বললে আমরা দিয়েছি। পরে আবার খরচ বাড়ছে আবার ৩৫টাকা করে নিয়েছে। আবার ব্যবহারিকের নামে প্রতি বিষয়ে একশ’ টাকা করে দিতে হয়। বিষয়গুলো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসা দরকার।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার সাহার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে বোর্ডের নির্দেশনার বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোন বিধান নেই। কেউ বোর্ডের নির্দেশনার বাহিরে টাকা নিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিন্ত্র রঞ্জন দাস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলতে চাইলে পুরো জেলার সকল উপজেলা একই নিয়মে চলে বলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানানো হয়। তারপরও বিষয়টি আপনারা একটু খোঁজ নেন।