শনিবার ● ২৫ মার্চ ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে অফিস সহকারী, ল্যাব এসিস্ট্যান্ট ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের ঘুষ বানিজ্যের অডিও রেকর্ড ফাঁস
কমলনগরে অফিস সহকারী, ল্যাব এসিস্ট্যান্ট ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে প্রধান শিক্ষকের ঘুষ বানিজ্যের অডিও রেকর্ড ফাঁস
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরফলকন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, ল্যাব এসিসট্যান্ট, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও নিরাপত্তা প্রহরী পদে নিয়োগে মোটা অঙ্কের ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ বানিজ্যের একটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। অডিও রেকর্ডে প্রধান শিক্ষক আবু জাকের বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দোহায় দিয়ে অফিস সহকারী, ল্যাব এসিসট্যান্ট পদে ৪লাখ ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী-নিরাপত্তা প্রহরী পদে ২লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করছেন।
জানা যায়, গত ২৪মার্চ শুক্রবার লক্ষ্মীপুর সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ে উক্ত পদগুলোর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সাজানো পরীক্ষা বুঝতে পেরে অনেক প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এতে নিরাপত্তা প্রহরী পদে কোরাম সংকটের কারণে ওই পদে পরীক্ষা নিতে পারেননি তারা। বাকি ৩ পদে পরীক্ষা হলেও ফলাফল গোপন রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
“১৭ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ডে প্রধান শিক্ষক আবু জাকের এক নিরাপত্তা কর্মী পদে প্রার্থীর কাছে বলতে শুনা যাচ্ছে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমাকে বলেছে, ২ লাখ নিতে হবে এর বাহিরে আমি কোন কথা বলতে রাজি নই। অফিস সহকারী ল্যাব এসিসট্যান্ট পদে ৫ লাখ পর্যন্ত দিতে রাজি আছে অনেকে কিন্ত আমি সভাপতির কথার বাহিরেতো যেতে পারিনা। তিনি আরও বলেন, আমার চাকরী অন্য জায়গায় ৮০ভাগ হয়ে আছে। আমি আপনাদের নিয়োগগুলো দিয়ে যেতে পারলে ভাল হয়। আমি চলে গেলে আপনাদের নিয়োগ হবেনা।”
এদিকে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি সদস্য বিল্লাহ শাহেদ মাহমুদ গিয়াস বলেন, এ নিয়োগ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি এ দু’জনের সিদ্ধান্তই হয়েছে। তারা মনগড়া রেজুলেশান তৈরী করে আমাদের স্বাক্ষর দিতে বলেছে; আমরা সদস্যরা কেউ স্বাক্ষর দেয়নি। নিয়োগ সংক্রান্ত কোন রেজুলেশনে কোন স্বাক্ষর দিবেন না বলে তিনি আরও বলেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আবু জাকের বলেন, কোন প্রার্থী বা প্রার্থীর অভিভাবকদের টাকার কথা বলছি এটা আমার মনে হয়না।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও চরফলকন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বাঘা বলেন, আমি প্রধান শিক্ষককে টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়ে কিছু বলিনি। প্রধান শিক্ষক যদি কিছু বলে থাকে এটা তার একক সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া তিনি এ প্রতিবেদককে নিউজ না করতে অনুরোধ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম কুমার শাহা বলেন, প্রধান শিক্ষক কোন অনিয়ম করছে কিনা আমার জানা নেই । এখানে আমরা স্বচ্ছ পরীক্ষা নিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, আমি এ নিয়োগের সাথে সম্পৃক্ত নই। তারপরও কোন দুর্নীতির অভিযোগ এলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য গত বছরের ১৬ নভেম্বর দৈনিক সমকাল পত্রিকায় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, ল্যাব এসিসট্যান্ট, নিরাপত্তা প্রহরী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। নৈশ প্রহরী ও আয়া পদে উল্লখযোগ্য কোন আবেদন না হওয়ায় ওই দুই পদে কোন পরীক্ষা হয়নি। এছাড়া মোটা অঙ্কের লেনদেনের বিষয়টি বুঝতে পেরে আবেদন করেও নিরাপত্তা প্রহরী পদে অনেকে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। ফলে কোরাম সংকটের কারণে ওই পদে পরীক্ষা নিতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।