বৃহস্পতিবার ● ২০ জুলাই ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » জেলা পরিষদের দুর্নীতি বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে চরকাদিরার ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিবাদ
জেলা পরিষদের দুর্নীতি বিরুদ্ধে ভোট না দিয়ে চরকাদিরার ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিবাদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে পর পর দুইবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। তিনি জেলা পরিষদের কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, জেলা পরিষদে দুর্নীতি সীমাহীন। জেলা পরিষদসহ দেশের সকল ক্ষেত্রের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছন। ‘না’ ভাটের বিধান থাকলে ‘না’ ভোট দিতেন বলে জানান তিনি।
সোমবার (১৭ জুলাই) লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের সদস্য পদে উপ নির্বাচনে সব ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিলেও ওই চেয়ারম্যান ভোট দিতে আসেননি।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন গাড়ি নিয়ে তার বাড়িতে গেলেও তাকে কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয়নি। এরআগে ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদের নির্বাচনেও তিনি ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। তিনিই একমাত্র ভোটার পর পর দুইবার ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন।
মাওলানা খালেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ চর কাদিরা ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা। আগামী সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে তিনি প্রার্থী হবেন।
কমলনগর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে (কমলনগর) মোট ভোটার ১১৮ জন। উপ নির্বাচনে ১১৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এরআগে গত বছরের অক্টোবরে জেলা পরিষদ নির্বাচনেও ১১৭জন ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তখনও ওই চেয়ারম্যান ভোট দেননি। পর পর দুইবারই চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি।
চর কাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমার দৃষ্টিতে যোগ্য ব্যক্তিরা ভোটে দাঁড়াননি। যদি ‘না’ ভোটের বিধান থাকতো, তবে আমি ‘না’ ভোট দিতাম। যোগ্যতার মাপকাঠি হল খোদা ভীতি। আল্লাহর ভয়ে যে একটা টাকাও আত্নসাত করবেনা, এখানে এমন ব্যক্তি আছে? দেখান। তা হলে আমি কাকে ভোট দিবো। সে নির্বাচিত হয়ে যে পাপ করবে তার অংশিদার আমাকেও হতে হবে। দুর্নীতি সব জায়গায় আছে; তবে জেলা পরিষদের দুর্নীতি সীমাহীন। জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট না দেওয়া হচ্ছে আমার প্রতিবাদ। আল্লাহর ভয়ে দুর্নীতি থেকে বিরত থাকবে এমন প্রার্থী পাই নাই, ভোট দিতেও যাই নাই। আমি পর পর দুইবার জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলাম।
তিনি আরও বলেন ভোট তো বেচা-কেনা হচ্ছে, এক ভোট এক লাখ-দেড় লাখ টাকা। এটা কি নির্বাচন, এটা কি ভোট?
জেলা পরিষদ থেকে কোন বরাদ্দ না পাওয়ায় আক্ষেপ করে তিনি আরও বলেন, টাকা দেইনাই, তদবির করি নাই, যে কারণে বরাদ্দ পাইনি। মাদ্রাসা-মসজিদে রবাদ্দ থেকেও শতাংশ হারে টাকা আদায় করা হয়। অথচ এসব বিষয়ে কারও কোনো কথা নেই, প্রতিবাদ নেই।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল জেলা পরিষদের সদস্য মনিরুল ইসলাম রিপুর মৃত্যুতে ৫ নম্বর ওয়ার্ড (কমলনগর) শূন্য হয়। ৬জুন নির্বাচন কমিশন থেকে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সোমবার (১৭ জুলাই) উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।