শনিবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে দলীয় অফিসের আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যুবলীগ নেতার
কমলনগরে দলীয় অফিসের আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যুবলীগ নেতার
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে রাতের অন্ধকারে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি। শুক্রবার রাতে হাজিরহাট বাজারের দলীয় কার্যালয়ে থেকে সকল আসবাবপত্র পিকআপ ভ্যানে করে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। পরে তোপের মুখে খালি হাতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. নুরুল আমিন রাজু বলেন, বাপ্পি ল্যাপটপসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু মালামাল আগেই সরিয়ে নিয়েছেন। চেয়ার টেবিল সহ বড় কিছু ফার্নিচার নেওয়ার চেষ্টা করলে বাধা দিলে তোপের মুখে চলে যান তিনি।
জানা যায়, ৪ বছর আগে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এ অফিস ভাড়া নেন। কিছু দিন পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় না থাকায় ওই অফিসে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমও শুরু হয়। ২ বছর আগে যুবলীগ নেতা বাপ্পি যুবলীগের অফিস বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিনকে অফিসের দায়িত্ব বুজিয়ে দেন। সে থেকে আওয়ামী লীগসহ সকল অঙ্গ সংগঠনের দলীয় সকল কার্যক্রম এ অফিস থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী মোশাররফ হোসেনের নির্বাচনী কার্যক্রম এ অফিস থেকে পরিচালিত হলেও যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করেন। তখন তারা সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে ভিন্ন অফিস ভাড়া নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করেন। ওই ভোটে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী (ঈগল) জয় লাভ করেন। সে থেকে যুব লীগ ও আওয়ামী লীগের একটি অংশের সাথে তাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাড নুরুল আমিন রাজু বলেন, রাতের আধাঁরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব লীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি পিকআপ ভ্যান নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের আসবাবপত্র নিতে আসলে বাধা দিলে তিনি চলে যান। তবে, কয়েকদিন আগে কার্যালয়ের ল্যাপটপ নিয়ে গেছেন।
দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড কে নিয়ে গেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ পর্যন্তও সাইনবোর্ড কার্যালয়ের লাগানো ছিল। কিন্তু পরে কে বা তা খোলে নিয়েছে আমরা জানিনা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো নিজাম উদ্দিন বলেন, যুবলীগের কিছু ফার্নিচার অফিসে আছে। ওই ফার্নিচার তারা নিতে চাইলে আমাদের বললে আমি ও আমার সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থেকে তাদের মালামাল বুজিয়ে দিতাম। কিন্তু যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি রাতে এসে আমাদের না জানিয়ে অফিসের মালামাল নেওয়া এটা ঠিক হয়নি।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুব লীগের আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় না থাকায় শর্তসাপেক্ষে আসবাবপত্রসহ যুবলীগের কার্যালয় আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে। কিন্ত শর্ত অনুযায়ী তারা (আওয়ামী লীগ) ভাড়া পরিশোধ করে আসছেনা। এদিকে, আমার সঙ্গে মালিক পক্ষের চুক্তি থাকায় বকেয়া ১ লাখ ২০ হাজার টাকার জন্য আমাকেই অব্যাহত চাপ দিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিনের পরামর্শে ওই অফিসের আসবাবপত্র পাশের রুমে নিয়ে রাখতে গেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড নুরুল আমিন রাজু তার অনুসারীদের জড়ো করে বাঁধা দেন। এসময় সভাপতি’র সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি তিন দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করার আশ্বাস দিলে আমি চলে যাই। দলীয় কার্যালয়ে কোনো ল্যাপটপ ছিলনা বলেও জানান।