সোমবার ● ১২ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে জেলেদের চাল ৮০কেজির স্থলে দেওয়া হচ্ছে ৬৫-৭০কেজি
কমলনগরে জেলেদের চাল ৮০কেজির স্থলে দেওয়া হচ্ছে ৬৫-৭০কেজি
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ঝাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকা জেলেদের খাদ্য সহায়তার চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণের সময় দুই মাসের ৮০ কেজির স্থলে ৬৫থেকে ৭০কেজি করে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে জেলে প্রতি ১২০টাকা করে আদায় করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. একেএম নুরুল আমিন রাজু উপস্থিত থেকে এ চাল বিতরণ করছেন।
জানা যায়, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের ষাটনল থেকে রামগতি উপজেলার ১০০কিলোমিটার এলাকায় ইলিশ রক্ষার্থে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। ওই সময় নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। দুই মাস অভিযান চলাকালে জেলেদের খাদ্য সহায়তার জন্য সরকার জেলে প্রতি বিনামূল্যে ৪০ কেজি করে ৮০কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কমলনগর উপজেলা ১১হাজার পাঁচশত কার্ডধারী জেলেদের মধ্যে ৭হজার পাঁচশত জেলেদের এ সুবিদার আওতায় আনা হয়।
মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার পাটারিরহাট ইউনিয়নে এক হাজার ৩’শত ১২ জেলে পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণকালে ৬৫ থেকে ৭০কেজি করে দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়াও হোল্ডিং ট্যাক্সের নামে এক’শ টাকা অন্য খরচ বলে ২০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে জেলেরা জানান। বিগত ৫বছর যাবত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আ’লীগের প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম করে আসছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সুবিদাভোগী সালেহ আহমেদ জানান, বালতি করে চাল মেপে দেওয়া হয়েছে। কত কেজি পেয়েছি আমি জানিনা। তবে আপনারা মেপে দেখেন। তার বক্তব্যের পর ওই চাল মেপে দেখলে ৭০কেজি পাওয়া যায়। তবে ইউনিয়ন পরিষদের সুবিদাভোগী কয়েকজন জেলে জানান, সকালে ট্যাগ অফিসার ও মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ৪-৫জন জেলেকে ৮০ কেজি করে দেওয়া হয়। তারা চলে যাওয়ার পর চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে ৬০-৬৫কেজি করে দিচ্ছেন।
পাটারিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের ৬নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য বশির আহম্মদ জানান, চাল কিছুটা কম হতে পারে। কত কেজি কম হতে পারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন “আমরা বিভিন্ন সমস্যায় আছি তাই ৭০কেজি করে দিচ্ছি।”
পাটারিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. একেএম নুরুল আমিন রাজু জানান, গুদাম থেকে চাল কম দেওয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে কম দিচ্ছি।
এদিকে খাদ্য গুদামের (ওসি এল এসডি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেকুল ইসলাম জানান, বস্তা প্রতি সর্বোচ্ছ ২০০গ্রাম কম হতে পারে। কোন ক্রমেই ১০ কেজি নয়।
ওই ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. মাসুদ জানান, তিনি জরুরী প্রয়োজনে উপজেলায় এসেছেন। তিনি থাকাকালিন কোন চাল কম দেওয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জেলেদের খাদ্য সহায়তার দুই মাসের চাল ৮০কেজিই দিতে হবে। এক কেজি চালও কম দেওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।