বুধবার ● ৩০ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে পুকুর থেকে ইউএনও’র বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স
কমলনগরে পুকুর থেকে ইউএনও’র বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিজেই। চার-পাঁচ দিন ধরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স সংলগ্ন পুকুর থেকে এ বালু উত্তোলন করে পাশেই শিশু পার্কের জন্য জায়গা ভরাট করছেন তিনি। বালু উত্তোলন করায় বর্তমানে পুকুরের চার পাশ দেবে গেছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সটি। উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ধসে যে কোন মূহুর্ত্বে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কা করছেন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
জানা যায়, নবগঠিত উপজেলা পরিষদ নির্মানের দুই তিন বছরের মাথায় ওই পরিষদ কমপ্লেক্সে ফাটল দেখা দেয়। চরম ঝুঁকি নিয়ে ওই কমপ্লেক্সে বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম চললেও পুনরায় মেরামতের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে। এতে ২ কোটি ৪৮লাখ ৪৪হাজার একশ’ এক টাকা প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করা হলেও মের্সাস কসমো বাংলা দুই কোটি ১০লাখ ২১হাজার নয়শ’ এক টাকায় কার্যাদেশ পায়। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গত বছরের ১৪ মে পুনরায় মেরামতের কাজ শুরু করলেও এখনো শেষ করতে পারেনি। কিন্তু এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান নিজের খামখেয়ালীপনায় ভবন সংলগ্ন পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করে আবারো চরম ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন ৪তলা এ ভবনসহ আশে পাশের কয়েকটি ভবনকে।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে, বালু মহাল এবং মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী পাম্প বা অন্য কোন মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না। ওই আইনের (৩) উপ-ধারা (২) এ উল্লেখ রয়েছে ড্রেজিং কার্যক্রম বাল্কহেড বা প্রচলিত বলগেট ড্রেজার ব্যবহার করা যাইবে না। এবং সর্বোপরি এভাবে বালু উত্তোলন আইনত দন্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে। সেখানে একজন ইউএনও আইনের রক্ষক হয়ে তা ভঙ্গ করে নিজেই করেছেন বালু উত্তোলন। বিষয়টিতে নিয়ে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন থেকে এ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। পুনরায় মেরামতের কারণে কিছুটা শঙ্কামুক্ত থাকলেও ইউএনও স্যার বালু উত্তোলন করে আবার এ কমপ্লেক্সকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সোহেল আনোয়ার জানান, জুন ক্লোজিংয়ের কারণে তিনি খুব ব্যস্ত ছিলেন যার কারণে বিষয়টি তাঁর নজরে আসেনি। খোঁজ খবর নিয়ে তিনি প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, মাছ চাষের লক্ষ্যে পুকুরের তলদেশ সমতল করার জন্য কিছু বালু উত্তোলন করা হয়েছে। এতে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের কোন ঝুঁকি হওয়ার কথা না।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী জানান, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন তিনি উপজেলা পরিষদে বসেন না। যার কারণে বিষয়টি তার নলেজে নেই।