বৃহস্পতিবার ● ১৫ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে র্যাব ‘আতঙ্কে’ বাড়িছাড়া তিন পরিবার
কমলনগরে র্যাব ‘আতঙ্কে’ বাড়িছাড়া তিন পরিবার
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে র্যাব সদস্যরা নিরীহ তিন পরিবারকে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানের নামে নারী সদস্যদের হেনস্তা, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও গ্রেপ্তারের ভয়ে ওইসব পরিবারের সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে। গতকাল বিকালে কমলনগর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা জানান, সাড়ে ছয় শতক জমি নিয়ে উপজেলার হাজিরহাট এলাকার মৃত আব্দুল মাজেদের ছেলে মোক্তার হোসেনের সঙ্গে চাচা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা খালেদ মোহাম্মদ আলীর বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে ওই জমিতে খালেদ নির্মাণকাজ করতে গেলে মোক্তার লোকজন নিয়ে বাধা দেয়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে মোক্তারসহ উভয়পক্ষের তিনজন আহত হন।
পরে স্বজনরা মোক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এদিকে ওই দিন রাত ৮টার দিকে র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর এর একদল সদস্য মোক্তারদের বাড়িতে হানা দেন। এ সময় তারা মোক্তার, তার ভাই গোলজার হোসেন ও চাচাতো ভাই হারুনুর রশিদের বসতঘরে অভিযানের নামে আসবাবপত্র তছনছ করেন। একপর্যায়ে তারা পরিবারের নারী সদস্য ও মোক্তারের বৃদ্ধ চাচা আব্দুল গোফরানকে গালমন্দ করা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হেনস্তা করে। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য এফরানা খাতুন সীমু, নাছিমা আক্তার, রিফাত চৌধুরী সজল ও আব্দুল গোফরান আরও জানান, কোনো প্রকার মামলা বা অভিযোগ ছাড়াই র্যাব সদস্যরা খালেদের পক্ষ নিয়ে তাদের এ হয়রানি করছেন। এছাড়া এ ঘটনায় খালেদদের পক্ষে গত রোববার কমলনগর থানায় মামলা দায়েরের পরদিন সোমবার র্যাব সদস্যরা লক্ষ্মীপুর শহর থেকে মামলার আসামি হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা খালেদ মোহাম্মদ আলী জানান, বিতর্কিত জমিতে নয়। সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে তিনি নির্মাণ কাজটি করছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে তার ওপর হামলা চালালে তিনি আহত হন। তবে র্যাবের অভিযানের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। র্যাব-১১ সিপিসি-৩ লক্ষ্মীপুর এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন জানান, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে র্যাবের টহল দল ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন। র্যাবের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সত্য নয়। অপরদিকে কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, থানায় দায়ের হওয়া মামলার এক আসামিকে র্যাব সদস্যরা গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করেছেন। তুচ্ছ এ ঘটনায় র্যাবের হস্তক্ষেপের বিষয়টি স্বাভাবিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।