শিরোনাম:
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১
---

Newsadvance24
শনিবার ● ১৬ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » রামগতি-কমলনগরে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » রামগতি-কমলনগরে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা
২০৬৩ বার পঠিত
শনিবার ● ১৬ জানুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

রামগতি-কমলনগরে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স

---

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) :লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলার হাটবাজার গুলোতে স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে চলছে জমজমাট সুদের ব্যবসা।চোখ ধাঁধানো ডেকোরেশন। আলোকসজ্জা,থরে-থরে সাজানো রয়েছে বাহারি ডিজাইনের স্বর্ণালঙ্কার। সবাই জানে জুয়েলারির দোকান। অথচ এই জুয়েলারির আড়ালে চলছে চড়া সুদে স্বর্ণ বন্ধকীর নামে সুদের ব্যবসা। এ বন্ধকী ব্যবসায় মানা হচ্ছে না সরকারি কোনো নিয়মনীতিও।স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সামান্যএকটি ট্রেড লাইসেন্সকে ব্যবহার করে তারা যুগের পর যুগ চালিয়ে যাচ্ছে এই অবৈধ বন্ধকী সুদের ব্যবসা। চড়া সুদে ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে গিয়ে প্রতারিত ও সর্বস্বান্ত হচ্ছেন এলাকাবাসী।রামগতি-কমলনগর উপজেলায় দুই শতাধিক জুয়েলারি দোকানে কয়েকশ’ কোটি টাকার অবৈধ বন্ধকী ব্যবসা চলছে। তবে প্রশাসনের সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এ অবৈধ স্বর্ণ বন্ধকী ব্যবসার নামে সুদের ব্যাপারে তারা অবগত নন।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, রামগতিউপজেলারজমিদারহাট,কেরামতিয়া,আশ্রম,আলেকজান্ডার,রামদয়াল,বিবিরহাট,রামগতিবাজার,চৌধুরীবাজার,হাজিগন্জ,বান্দেরহাট,ও আযাদনগর কমলনগর উপজেলার করুনানগর,হাজিরহাট,চরলরেন্স,করইতলা,তোরাবগন্জ,মুন্সিরহাট,মতিরহাট,চৌধুরী বাজার,পাটারিরহাট হাট,খায়েরহাট,ফজুমিয়ারহাট,হাজী ফাজিল ব্যাপারির হাট,ইসলামগন্জ বাজারসহ ছোট বড় বিভিন্ন বাজারে প্রায় দুই শতাধিক জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে বন্ধকী ঋণের ব্যবসা চলছে। বন্ধকী ব্যবসায় ১ শ টাকায় মাসে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত সুদ নেওয়া হয়।এতে প্রতি মাসে এই সব স্বর্ন ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলের নদী ভাংগা অসহায় মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্বর্ণ ব্যবসার আড়ালে সুদের ব্যবসা করে অনেকে রাতা-রাতি কোটি পতি হওয়ার আসায় মাত্র দুই-তিন বছরে অলংকার তৈরির কারিগর থেকে নিজেই স্বর্ণ ব্যবসায়ী বনে যায়। অনেক অসহায় মানুষ টাকার প্রয়োজনে স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা নেয় এই সব সুদি স্বর্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। টাকা নেওয়ার সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা গ্রাহককে নির্দিষ্ট সময় সীমা বেধে দেয়।তাদের বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে স্বর্ণ নিতে না পারলে গ্রাহকের ঐ স্বর্ণ আর পেরত পাওয়া যায়না।কিছু অসাধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন কৌশলে প্রতারনা করে অনেক ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে বিভিন্ন ক্যারেট স্বর্ণ আমদানির নাম করে গ্রাহকদের নিকট ভেজাল স্বর্ণ বিক্রি করছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ব্যবসায়ীদের সাথে গ্রাহকদের হারহামেশা দেন দরবার দেখা যায়।বন্ধকী ব্যবসায়ীরা জানান, স্বর্ণ বন্ধক রাখা গ্রাহকদের জন্য তাদের আলাদা খাতা বা ফাইল সংরক্ষণ করতে হয়। সেখানে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যাদিসহ স্বাক্ষর ও ফোন নম্বর রাখা হয়। স্বর্ণের মালিককে স্বর্ণ ও টাকার তথ্যসংবলিত একটি কার্ডও দেওয়া হয়। শর্তানুযায়ী, কোনো ঋণ গ্রহীতা টানা তিন মাস সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে স্বর্ণ গলিয়ে বিক্রি করার অধিকার থাকে বন্ধকী ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি সুদ ও ঋণের টাকার পরিমাণ বন্ধকী স্বর্ণের দামের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে স্বর্ণ গলিয়ে ফেলার শর্তও জুড়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তবে স্বর্ণ বা গহনা গলিয়ে ফেলার আগে ব্যবসায়ীরা গ্রাহককে অবহিত করার রীতি অনুসরণ করেন বলে জানান তারা
গ্রাহকরা জানান, তাৎক্ষণিক কোনো ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দিলে কাগজপত্রের জামিলা ছাড়া টাকা পাওয়ার আর কোনো সহজ পথ নেই। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এক সপ্তাহের আগে টাকা দিতে পারে না। পাশাপাশি তাদের সদস্য হতে হয়।কিন্তু বন্ধকী ব্যবসায়ীর কাছে স্বর্ণ ছাড়া আর কিছুই লাগে না।তাই তারা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করে বন্ধক রাখেন। এতে তাদের কাছ থেকে চড়া সুদ আদায় করেন এই সব সুদি মহাজনরা।
রামগতির আলেকজান্ডার বাজার কমিটির সভাপতি শামছুল বাহার খন্দকার জানান, স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সাথে গ্রাহকদের সব সময় একটা সমস্যা লেগেই থাকে। কি ভাবে তারা এই ব্যবসা পরিচালনা করে তা আমরা জানিনা।তবে সমস্যা তৈরী হলে তখন তাদের কাছে বিচার নিয়ে আসেন।
হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জানান, স্বর্ণ কেনাবেচার জন্য সরকারি বিধি মেনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়ে থাকে। বন্ধকী ব্যবসার জন্য কোনো লাইন্সেস দেওয়া হয় না।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল মোমিন বলেন, জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে বন্ধকী ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া পুরোপুরি অবৈধ। জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে বন্ধকী ব্যবসার বিষয়টি তিনি অবগত নন। এ ব্যাপারে কেউ সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ দিলে অবৈধ বন্ধকী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেন।





আর্কাইভ