বৃহস্পতিবার ● ১০ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মধ্যরাতে কমলনগরে আ’লীগের ভূয়া ভোটের সম্মেলন ! সংঘর্ষে আহত ১০
মধ্যরাতে কমলনগরে আ’লীগের ভূয়া ভোটের সম্মেলন ! সংঘর্ষে আহত ১০
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে চরকাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন মধ্যরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সম্মেলনে ভূয়া ভোটাররের ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সভাপতি। এ সব ঘটনায় চেয়ার ছোড়াছুডি, সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে সম্মেলনস্থল উপজেলার ফজুমিয়ার হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলা আওয়ামীলীগ উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নে সম্মেলনে সভাপতি পদে ৩জন ও সাধারণ সম্পাদক পকে ৪জন ফরম সংগ্রহ করে জমা দেন। বুধবার সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময়ে চরকাদিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে উদ্বোধক ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার। প্রধান অতিথি ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মিজানুর রহিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মতলব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া মান্নাসহ জেলা ও উপজেলার নেতারা।
সম্মেলনের শেষের দিকে সভাপতি পদে নুরুল ইসলাম সাগরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঘোষণা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটের আহবান করে নেতৃবৃন্দরা। এতে সভাপতি প্রার্থী আব্বাস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সবুর খান, ওমর ফারুক ও বেলাল হোসেনের সমর্থকরা ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করতে দাবি তুলে শ্লোগান দেন। এ নিয়ে চার পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আধাঘণ্টা ধরে চলা এ ঘটনায় ৭নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিল্লাত হোসেন, ৪ নম্মর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মো. মিজান, আকবর হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও স্বপন পাটোয়ারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরিস্থিতি শান্ত হলে জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ রাত সাড়ে ১২টার দিকে সভাপতি পদে নুরুল ইসলাম সাগরকে বিনা প্রতদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট দেন। ওই সময় প্রকৃত ভোটাররা সম্মেলনস্থলে উপস্থিত ছিলেন না অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।
সভাপতি আব্বাস হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ওমর ফারুক ভূইয়া বেলাল হোসেন বলেন, সম্মেলনে নুরুল ইসলাম সাগরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি পদে ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা করলে কাউন্সিলর ও কর্মী-সমর্থকরা ভোটের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেয়। এতে নুরুল ইসলাম সাগরকে ও সবুরের লোকজন স্থানীয় নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে অন্তত ১০জন আহত হয়। তারা আরো বলেন, ওই ইউনিয়নে মোট কাউন্সিলর হচ্ছে ২৫১। এতে সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটের আহবান করলে ১২১জন ভোট দেয়। এদের অধিকাংশই ভূয়া। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগ বিনা দ্বন্দ্বিতায় নুরুল ইসলাম সাগরকে সভাপতি ও ভূয়া ভোটে সালেহ উদ্দিন সবুরকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত সালেহ উদ্দিন সবুর বলেন, ভোটে জিততে পারবে না নিশ্চিত হয়ে আব্বাস হোসেন, ফারুক ভূয়া ও বেলাল হোসেনের সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের লোকজন আহত হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, সম্মেলনে কিছু নেতাকর্মীদের মধ্যে রাগারাগি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, সম্মেলনকে ঘিরে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।