সোমবার ● ২ মে ২০২২
প্রথম পাতা » ইসলাম » চাঁদ না দেখে রোজা রাখা ও ইদ পালন করা কতটা যুক্তিক?
চাঁদ না দেখে রোজা রাখা ও ইদ পালন করা কতটা যুক্তিক?
ইউছুফ আলী মিঠু
রষ্ট্রের আইন মানা ইসলামে ফরজ। সকল পরিস্থিতে রাষ্ট্রের আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল। আর ইসলাম তা সমর্থন করেনা। ইসলামের ইবাদতগুলো চাঁদ দেখার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পবিত্র রমজান মাসের রোজা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫)।
এই আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘যারা এ মাস পাবে’। অর্থাৎ সবাই নয়, বরং তারাই রোজা রাখবে, যারা চাঁদ দেখতে পাবে। বিষয়টি আরেকটু স্পষ্ট হয় রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসের মাধ্যমে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো এবং চাঁদ দেখে ইদ করো। কিন্তু যদি আকাশে মেঘ থাকে, তাহলে গণনায় ৩০ পূর্ণ করে নাও।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯০০)
বিশ্বনবী (সা.)-এর এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, রমজান শুরু কিংবা ইদ করার ব্যাপারটা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। কোনো এলাকায় চাঁদ দেখা না গেলে তাদের জন্য রোজা রাখা নিষিদ্ধ।
রোজা ফরজ হওয়ার জন্য ওই এলাকার প্রত্যেকের চাঁদ দেখা জরুরি নয়। বরং বিশ্বস্ত সাক্ষী দেখলেও রোজা শুরু করার অবকাশ আছে।
কেউ কেউ মনে করেন, এই হাদিসের মাধ্যমে একই দিনে বিশ্বব্যাপী রোজা ও ঈদ পালন করা সাব্যস্ত হয়। তাঁদের দাবি, মহান আল্লাহ মধ্যপ্রাচ্যকে মধ্যস্থল বানিয়েছেন। তাই সেখানে চাঁদ দেখা গেলে সারা বিশ্বে রোজা ও ইদ পালন করতে হবে! অথচ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনাকে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলুন, তা হলো মানুষ ও হজের জন্য সময় নির্দেশক।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৯)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা বলেন, এখানে ‘আহিল্লাহ’ শব্দ আনা হয়েছে, যার অর্থ একাধিক নতুন চাঁদ, যা একেক উদয়স্থলে একেক দিন উদিত হয়।
তাহলে বাংলাদেশে বাস করে কোথাও চাঁদ দেখা গেলো না কিছু মানুষ রোযা রাখলেন। আবার রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের এক দিন আগে তারা ইদ উদযাপন করছেন। বিষয়টি রাষ্ট্র যেমন আমলে নিচ্ছেন না। আবার ইসলাম বিশারদরাও এ বিষয়ে সঠিক যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করছেন কিনা আমি জানি না। বিষয়টি আমলে নিয়ে এ জাতিকে এ বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত করা জরুরী নয় কি? আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে চলার তাওফিক দান করুন।
লেখক ও সাংবাদিক