বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » লক্ষ্মীপুর পৌর শিশু পার্ক-গরু বাজার টেন্ডার জানেন না সভাপতি, অনিয়মের শঙ্কা
লক্ষ্মীপুর পৌর শিশু পার্ক-গরু বাজার টেন্ডার জানেন না সভাপতি, অনিয়মের শঙ্কা
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর পৌর শিশু পার্ক ও গরু বাজারের টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। তবে কমিটির সভাপতিকে না জানিয়েই এ টেন্ডার আহবান করার অভিযোগ উঠেছে। এতে বড় ধরণের দুর্নীতি ও অনিয়মের শঙ্কা রয়েছে।
বুধবার (১৩ ডিসেম্ব) দুপুরে টেন্ডার কমিটির সভাপতি প্যানেল মেয়র কামাল উদ্দিন জানান অনিয়ম ও দুর্নীতি করতেই তাকে কিছু জানানো হয়নি। তবে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভঁইয়ার দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও টেন্ডার কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর কামাল উদ্দিন খোকন বলেন, শুনেছি টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে পৌরসভার এক কর্মকর্তা আমাকে মৌখিকভাবে টেন্ডার বাক্স খোলার বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু টেন্ডার কার্যক্রমের শুরু থেকেই আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। শুধু নামেই আমাকে সভাপতি করা হয়েছে। টেন্ডার বাক্স খোলার সময় উপস্থিত থাকবো না বলে জানিয়ে দিয়েছি। বড় ধরণের দুর্নীতি ও অনিয়ম করতেই পূর্ব থেকে বিষয়টি গোপন রেখেছে সংশ্লিষ্টরা।
কামাল উদ্দিন খোকন অভিযোগ করে বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ার আগে সভাপতি এবং সদস্যদের চিঠির মাধ্যমে পৌরসভা থেকে অবহিত করতে হয়। এরপর সদস্যরা সভা করে টেন্ডার প্রক্রিয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করে। তারপর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন এবং টেন্ডারপত্র আহবান করতে হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের গরু বাজার এবং পৌর শিশুপার্ক ইজারা দেওয়ার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় এ ধরনের কিছুই করা হয়নি। আমি সভাপতি হয়ে নিজেই কিছু জানতাম না। তাই পছন্দের লোককে ইজারা দিতে সবকিছু গোপন প্রক্রিয়ায় হচ্ছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক পৌরসভার দুইজন কাউন্সিলর বলেন, মেয়রের পছন্দের লোককে টেন্ডার পাইয়ে দিতে সবকিছু গোপন রাখা হয়েছে। এ কারণে টেন্ডার কমিটির সভাপতিকে কোন কিছুই অবগত করা হয়নি। পৌরসভার বিভিন্ন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। এনিয়ে মেয়রের সঙ্গে অধিকাংশ কাউন্সিলরদের সাথে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। মেয়র তার পছন্দের কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে গোপনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
পৌরসভার আরও কয়েকজন কাউন্সিলর একই কথা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, পছন্দের লোককে দিতে পৌর মেয়র তার অনুসরীদের নিয়ে গোপনে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে চাচ্ছে।
এদিকে সোমবার টেন্ডার বাক্স খোলার কথা থাকলেও খোলা হয়নি। এছাড়া এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোন তথ্যই জানাননি পৌরসভার সচিব, নির্বাহী প্রকৌশলী ও বাজার শাখার পরিদর্শক।
তবে বাজার পরিদর্শক মমতাজ বেগম বলেন, সোমবার টেন্ডার বাক্স খোলার কথা ছিল। কিন্তু এখনো খোলা হয়নি। মেয়র ও কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে টেন্ডার বাক্স খোলা হবে।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার হোসেন জুয়েল বলেন, কতজন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করেছেন তা জানা নেই। বাজার শাখা থেকে আমার কাছে হস্তান্তর করলে আমি জানতে পারবো।
পৌরসভার সচিব আলাউদ্দিন বলেন, আমি টেন্ডার কমিটিতে নেই। এজন্য সবকিছু বলতে পারছি না। এটি আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার হোসেন বলতে পারেন। কিন্তু টেন্ডারের বিষয়ে কমিটির সভাপতি কিছু জানেন না কেন- এমন প্রশ্নে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। বিষয়টি টেন্ডার কমিটির সভাপতির জানা না থাকলে, এটি তার দুর্বলতা।