

মঙ্গলবার ● ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে শূন্য থেকে কোটি টাকার মালিক ছাত্রলীগ নেতা
কমলনগরে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে শূন্য থেকে কোটি টাকার মালিক ছাত্রলীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ছাত্রলীগ নেতা থেকে চেয়ারম্যান হয়ে মির্জা আশরাফুজ্জামান রাসেল শূন্য থেকে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। চার বছর আগে কাটা ভোটে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হয়ে ওই ইউনিয়নের জনগনের কোন পরিবর্তন না হলেও তার মালিকানায় রয়েছে দু’টি ব্রিকফিল্ড। সরকার পতনের পর কাটাভোটের সকল চেয়ারম্যানরা পালিয়ে গেলেও বর্তমান সময়ের স্থানীয় কিছু নেতাদের ম্যানেজ করে সে আছেন বহাল তবিয়তে।
জানা যায় মির্জা আশরাফুজ্জামাম রাসেল ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখনকার সময়ে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগরের) আসনে সংরক্ষিত নারী সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী। মূলত লাইলীর হাত ধরেই তার উত্থান। এর পর থেকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেত্রীর ছত্রছায়ায় থাকতেন রাসেল। কিছু দিন রাসেল ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের নেতাও ছিলেন বলে গুন্জন রয়েছে। এর পর ফরিদুন নাহার লাইলীর প্রচেষ্টায় ২০২১ সালে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পান। ওই বছরের ২১ জুন নির্বাচনে সাবেক চেয়াম্যান তার খালাতো ভাই ফয়সাল আহমেদ রতনকে মাঠে দাঁড়াতে দেয়নি প্রশাসন ও তার লোকজন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন এলজিএসপি, কর্ম সৃজন কর্মসূচি প্রকল্প, টিআর কাবিখা ও কাবিটাসহ কোন প্রকল্পেরই কাজ সঠিকভাবে হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে সকল প্রকল্পের টাকা একাই আত্মসাৎ করেন সে। ওই টাকা দিয়ে তার ইউনিয়নে গড়ে তোলেন দু’টি অবৈধ ইটভাটা। বর্তমানের তার এ অবৈধ ইট ভাটায় প্রায় ৫-৭কোটি টাকার কার্যক্রম চলছে বলে জানা যায়। এছাড়াও চেয়ারম্যান হওয়ার প্রথম বছরেই ৮নাম্বার ওয়ার্ডে ৩ একর ২০শতাংশ জমি কিনেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করছেন।
ওই ইউনিয়নের ৩ নাম্বার ও ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের নুরুল ইসলাম, নুর করিম,ফয়েজ আহমদ ও হোসেন আহম্মদ জানান, গত চার বছরে তাদের ওয়ার্ডে কোন উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। একদিনের জন্য ও তাদের এলাকায় চেয়ারম্যানেকে দেখেননি তারা।
ওই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মতিন জানান, রাসেল চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তার ওয়ার্ডে কোন বরাদ্দ দেয়নি। এছাড়াও কোন ইউপি সদস্যকে সে পাত্তা দেয়না। জনগনকে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবাই মেম্বার হয়েছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান একাই ওই ইউনিয়নের সকল প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করছেন। যার কারণে সকল ইউপি সদস্য এলাকায় তোপের মুখে রয়েছেন।
এদিকে তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা আশরাফুজ্জামান রাসেল দাবি করেন,তার ইউনিয়নে বেশিরভাগ রাস্তাই পাকা এবং সলিং। ৩-৪ টা মাটির রাস্তা আছে ওই গুলোতে কিছু কাজ তিনি করেছেন। জমি ক্রয়ের বিষয়ে বলেন, জমি আমার মায়ের টাকায় কেনা হয়েছে। আর একটা ব্রিকফিল্ড আমার আরেক মামার। এ সময় তিনি নিউজ না করতে এ প্রতিবেদক বার বার অনুরোধ করেন।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ শুনতেছি। ওই ইউনিয়নের অনেকগুলো কাজ চেয়ারম্যানকে হিট দিয়ে করিয়েছেন তিনি ।