বুধবার ● ২৭ অক্টোবর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » কমলনগরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধীর সন্তান প্রসব : মা হয়েছে জোসনা, বাবা হবে কে?
কমলনগরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধীর সন্তান প্রসব : মা হয়েছে জোসনা, বাবা হবে কে?
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী জোসনা মা হয়েছেন। গত শুক্রবার সকালে নিজ বাড়িতে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন সে। ওই এলাকার সাধারণ মানুষের প্রশ্ন। জোসনাতো মা হয়েছে, এখন সন্তানের বাবা হবে কে? বাবার পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীর পরিবার সুত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে হাজিরহাট ইউনিয়নের আবুল খায়ের মাঝি বাড়ির মিজানের বুদ্ধি প্রতিবন্ধি জোসনাকে গৃহপরিচারিকার কাজে নেয় একই এলাকার মধ্য হাজি বাড়ির মৃত নাছিরুল হকের ছেলে আকরাম হোসেন শাহেদ। চলতি বছরের জুলাই মাসে শাহেদ মিয়া জোসনা অসুস্থ বলে তার মামা ও নানীকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। ওই সময় শাহেদ জোসনার পেটে টিউমার হয়েছে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে বলে মামা ও নানীকে বলেন। পরে সে মামাকে সাথে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় জোসনার আল্টা¯েœাগ্রাম করানো হলে তার পেটে ৭ মাসের একটি সন্তান রয়েছে বলে রিপোর্ট আসে। পরে শাহেদ মিয়া বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে অবৈধ গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। উপায়ন্ত না পেয়ে সে জোসনার পরিবারকে তাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করে সে।এতে জোসনার মামা ও নানী অস্বীকৃতি জানায়। এর কিছু দিন পরে শাহেদ তার শুভাকাঙ্খিদের নিয়ে তার বাড়িতে একটি বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে শাহেদ মিয়া জানায় ৭মাস আগে তার বাড়িতে চরফলকন ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো মামুন হোসেন রঙ্গের কাজ করেছে। ওই রঙ্গ মিস্ত্রি তার গৃহপরিচারিকাকে তাদের অজান্তে ধর্ষণ করেছে এবং বর্তমানে সে অন্ত:সত্ত্বা । বর্তমানে ওই ছেলে প্রবাসে রয়েছেন। ওই সময় শাহেদ মিয়া নিজ উদ্যোগে ৫০হাজার টাকা দিয়ে তরুনীকে বিদায় করে দিতে উপস্থিত সবাইকে অনুরোধ করেন। ওই সময় ভুক্তভোগী পরিবার তাদের এ প্রস্তাব মেনে নেয়নি। পরে শাহেদ পরিবারকে ম্যানেজ করতে না পেরে জোসনাকে তার বাড়িতে আটকিয়ে রেখে ভয়ভীতি এবং লোভ দেখিয়ে ওই মামুন তাকে ধর্ষণ করেছে বলে কমলনগর থানায় নিয়ে ওসিকে অবহিত করেন। এ ঘটনায় গত ২৪ আগস্ট (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধি জোসনার মা বাদী হয়ে কমলনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ধর্ষিতার জবানবন্ধিতে চরফলকন ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. প্রবাসী মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও এক সপ্তাহ পরে জোসনা মামুনের নাম বাদ দিয়ে শাহেদ তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেছে বলে প্রকাশ করেন।
জোসনা আক্তার বলেন, শাহেদ মামা আমাকে মামুনের নাম বলার জন্য প্রথমে ভয়ভীতি দেখায়। পরে আমাকে বেশি টাকা দিবে এবং আমাকে সারাজীবন তাদের বাড়িতে রাখবে যদি আমি মামুনের নাম বলি। তার কথা মত আমি মামুনের নাম বলেছি। শাহেদ মামা বিভিন্ন সময়ে আমাকে ধর্ষণ করেছে। এখন আমার কোন খোঁজ খবর নেয় না।
এদিকে আকরাম হোসেন শাহেদ মিয়ার মুঠোফোনে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেনি।
স্থানীয় হাজিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন জানান, যেহেতু জোসনার ঘরে পুত্র সন্তান হয়েছে। অপরাধী যে হোক সন্তানতো নির্দোষ। সন্তানের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তার বাবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া উচিৎ।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীর বক্তব্যের আলোকে তখন একজনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। এখন মেয়ে যদি অন্য কাউকে দোষারোপ করে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশ পেলে আমরা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারবো।