শনিবার ● ২৭ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » পল্লী বিদ্যুতের অবহেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট স্কুলছাত্র তামিমের বাম হাত কেটে ফেলতে হয়েছে
পল্লী বিদ্যুতের অবহেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট স্কুলছাত্র তামিমের বাম হাত কেটে ফেলতে হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজএ্যাডভান্স
রামগতি (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে পল্লী বিদ্যুতের অবহেলায় পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় স্কুলছাত্র তামিম ইকবাল (১২)। তার জীবন এখন সংকটাপন্ন। তামিমের বাম হাত পুরোপুরি কেটে ফেলতে হয়েছে। ডান পায়ের দু’টি আঙ্গুল কেটে ফেলতে হবে। ঝলসে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরেছে। মাথার আঘাতও গুরুতর। এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে শিশু তামিম। ছেলেকে বাঁচাতে সবার সাহায্য-সহযোগীতা চেয়ে আকুতি করছেন দিনমজুর বাবা।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তামিমের মা আমেনা বেগম পল্লী বিদ্যুতের অবহেলার কারণে তার সন্তান বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েছে এমন অভিযোগ এনে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানান। এরআগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে তামিম বিদ্যুৎপৃষ্ট হয় গুরুতর আহত হয়। দুই মাস ধরে সে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউট শিশু সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তামিম রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চর টবগী গ্রামের দিন মজুর শাহাদাত হোসেনের ছেলে; সে স্থানীয় কাটাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, মেঘনা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর চর টবগী গ্রামের একটি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। এরপর থেকে ওই খুঁটির বিদ্যুতের তারগুলো এলোমেলোভাবে নদীর পাড়ে থাকে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা রামগতির পল্লী বিদ্যুৎতকে অবগত করলেও তারা ঘটনাস্থলে আসেনি। দুইদিন পর ২৫ সেপ্টেম্বর স্কুলছাত্র তামিম নদীতে গোসল করতে গেলে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারাতœক আহত হয়। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে রামগতি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতিতে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়। ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
আহত তামিমের মা আমেনা বেগম বলেন, পল্লী বিদ্যুতের অবহেলায় আমার ছেলে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। স্থানীয়রা খবর দিলেও পড়ে থাকা বিদ্যুাতের খুঁটি ও তার সরিয়ে না নেওয়ায় আমার ছেলে দুর্ঘটনার শিকার। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে রামগতি পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম রেজাউল করিম বলেন, মেঘনা নদী ভাঙনের কারণে রাতে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যায়। কিন্তু বিষয়টি ওই এলাকা থেকে কেউই জানায়নি। দুর্ঘটনার পরে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। নদী ভাঙনের মুখে বিদ্যুতের খুঁটি যখন ঝুঁকিতে ছিল তখন কেনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, হঠাৎ করে ভাঙন বেড়ে যায়, কিছু বুঝে উঠার আগেই বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যায়।
আহত স্কুলছাত্র তামিমের দিনমজুর বাবা শাহাদাত হোসেন বলেন, ধার-দেনা করে ছেলের চিকিৎসা চালিয়ে আসছি। এখন আর পারছিনা। টাকা নেই; ছেলের জন্য ঠিকমত ওষুধ কিনতে পারিনা। আমি ও আমার স্ত্রী প্রায়ই না খেয়ে থাকি। এমন পরিস্থিতিতে অসহায় দিনমজুর বাবা সবার সহযোগীতা কামনা করছেন। সাহায্য পাঠাবেন (০১৮৫৮ ০৪০৯২০ তামিমের বাবার বিকাশ নম্বর)