সোমবার ● ৭ মার্চ ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করে ইউনিয়ন আ’লীগের পকেট কমিটি, প্রতিবাদের ঝড়
সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর জাল করে ইউনিয়ন আ’লীগের পকেট কমিটি, প্রতিবাদের ঝড়
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাতের আধাঁরে পকেট কমিটি দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত ১২টার দিকে এ পকেট কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। এতে তাৎক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. একেএম নুরুল আমিন রাজু তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে প্রতিবাদ করেন। এ দিকে এ অবৈধ কমিটির বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রোববার রাতে কমলনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ৬জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।
তারা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ৫ ও ৬ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগ চরলরেন্স ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীতা আহবান করেন। ওই সময় ৩ জন সভাপতিও ৩জন সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম সংগ্রহ করে জমা প্রদান করেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে তখন সম্মেল স্থগিত হয়ে যায়। এর পর এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারী উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভা হয়। ওই সভায় ১মার্চ চরলরেন্স ইউনিয়নের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। যথাসময়ে সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাষ্টার নিজকে অসুস্থ দাবি করে সম্মেলন স্থগিত করেন। কিন্তু শনিবার (৫জানুয়ারী) মধ্য রাতে তার এবং সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন রাজুর স্বাক্ষরিত একটি কমিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দীর্ঘ দিনের আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা ওই ইউনিয়নের সভাপতি মো. বকুলের রহমানকে বাদ দিয়ে এক প্রবাসী নুর করিমকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরীকে তার পদে বহাল রেখে কমিটির অনুমোদন করা হয়। আদম ব্যবসায়ি নুর করিমকে সভাপতি করায় এতে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা সকলের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক চরলরেন্স ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরণ বলেন, গঠনতন্ত্র মোতাবেক ২ বছর আগে ফরম বিক্রি করে উপজেলা আওয়ামীলীগ। তখন এ নুর করিম এলাকায় ছিলেন না। সম্মেলন স্থগিত হওয়ার ২ বছর পরে এসে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল আমিন মাষ্টার প্রবাসী নুর করিমকে রাতের আধাঁরে কমিটি দিয়েছেন। এতে প্রকৃত আওয়ামীরা হতাশ হয়েছেন।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসুবুক) তার প্রতিবাদে যা উল্লেখ করেন তা হুবুহু তুলে ধরা হলো- “প্রতিবাদ- রাত ১২টা দশ বাজে আমি ঢাকা থেকে আমার লক্ষ্মীপুরের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। গাড়ির মধ্যে থাকা অবস্থায় আমি ফেসবুকে দেখতে পাই যে, চরলরেন্স ইউনিয়নের কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে তাং ০৫-০৩-২২ইং। আমি হতবাক! আমার দস্তখত জাল করে এই কমিটি ফেসবুকে দেয়। আমি প্রতিবাদ করছি। কারণ ০১-০৩-২২তাং সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো। আমরা সম্মেলন স্থগিত করি। সভাপতি বলছিলো আগামী ১০-০৩-২২ তাং সম্মেলনের তারিখ করবে।”
চরলরেন্স ইউনিয়ন অওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি মো. বকুলের রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ দিন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার ইউনিয়নে সম্মেলনের তারিখ ঘোষনা হয়েছে ২ বছর আগে। তখন এ নুর করিম বিদেশে ছিলেন। এখন তাকে উপজেলা আওয়ামীলীগের এক পক্ষ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কমিটি দেয়।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএম নুরুর আমিন মাষ্টার বলেন, কমিটি হওয়ার পরে কিছু মত পার্থক্য থাকবে এটা স্বাভাবিক। পদবঞ্চিতদের একটু ক্ষোভতো থাকবে। আশা করি দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।