শুক্রবার ● ২৭ মে ২০২২
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » সৌদিতে বাংলাদেশী যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, লাশের অপেক্ষায় পরিবার
সৌদিতে বাংলাদেশী যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, লাশের অপেক্ষায় পরিবার
নিজস্ব প্রতিনিধি, নিউজ এ্যাডভান্স
কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) : সৌদি আরবের আল গাসিম এলাকায় শরীফ হোসেন (২২) নামের এক বাংলাদেশী যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শরীফের বাড়ি কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের জাজিরা এলাকায়। সে ওই এলাকার মো. সিরাজের ছেলে। সৌদিতে বাংলাদেশী দূতাবাসের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন ও ও লাশ ফেরত আনার জন্য বৃহস্পতিবার (২৬মে) কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবারে একটি আবেদন করেন।
পরিবার ও আবেদন সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৭ মাস আগে কমলনগরের হাজিরহাট ইউনিয়নের সৌদিআরবে কর্মরত আলা উদ্দিনের মাধ্যমে খেজুরের বাগানে কাজ করার জন্য ওই দেশে যায় শরীফ। শরীফকে খেজুরের বাগানে কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও আলা উদ্দিন তাকে একটি কসাইয়ের দোকানে চাকুরী দেয়। ওই দোকানের মালিক তাকে প্রায় মারধর করে বলে শরীফ তার পরিবারকে জানায়। বিষয়টি শরীফের বাবা আলা উদ্দিনকে মোবাইলফোনে জানালে সে কোন গুরুত্ব দেয়নি। কিছু দিন পরে আলা উদ্দিন ছুটিতে দেশে চলে আসে। আলা উদ্দিন ছুটিতে আসার পর থেকে শরীফের সাথে পরিবারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপায়ন্ত না পেয়ে শরীফের পরিবার আলা উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে আলা উদ্দিন তাদের ছেলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তাদের জানায়। পরে চলতি বছরের ৮মার্চ শরীফের বাবা আলা উদ্দিনকে বিবাদি করে কমলনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা যাচাই-বাছাই করে শরীফের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য আলাউদ্দিনকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এর কিছু দিন পরই আলা উদ্দির সৌদিতে চলে যায়। সে (আলা উদ্দিন) সৌদিতে গিয়ে শরীফের লাশ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আর কোন যোগাযোগ করছে না।
নিহত শরীফের বাবা মো. সিরাজ বলেন, ধারদেনা করে ছেলেকে সৌদিতে পাঠিয়েছি। খেজুরের বাগানে কাজ দেওয়ার কথা থাকলে তাকে কসাইয়ের দোকানে চাকুরী দেয় আলা উদ্দিন। ওই মালিক প্রায় আমার ছেলেকে নির্যাতন করতো। বিষয়টি আলা উদ্দিনকে জানালে সে কোন কর্ণপাত করেনি। এখন শুনি আমার ছেলে মারা গেছে। আমি এর সঠিক বিচার ও আমার ছেলের লাশ চাই।
এদিকে আলা উদ্দিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফেরদাউস বেগমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সৌদিতে লাশ ফেরত পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু স্থানীয় চেয়ারম্যানের একটি প্রত্যয়ন পত্র পাঠালে তার লাশ দ্রুত চলে আসবে। এছাড়াও শরীফের সাথে এলাকায় এক মেয়ের সাথে প্রেম ছিলো। ওই মেয়ে আরেক ছেলের সাথে ফটো তুলে শরীফকে পাঠালে ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি এলাকার সবাই জানে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, আমার কাছে শরীফ নামে এক যুবকের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আবেদন করেছে তার বাবা। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।